মহাজনের কাছে অপমানিত হয়ে গোপাল বলল, টাকা কি দেব না বলেছি নাকি? আপনার টাকা আমি আগামীকালই দিয়ে দেব। পরশু সকালেই আমার বাড়িতে চলে আসুন। আমি টাকা শোধ করে দেব। সামান্য টাকার জন্য এত অপমান! আসুন পরশু আমার বাড়ি, যে করেই হোক আপনার টাকা আমি পরিশোধ করার ব্যবস্থা করবই।
গোপালের কথা শুনে মহাজন মনে মনে ভাবলেন গোপাল যখন এত লোকের সামনে কথা ছিল তখন পরশু দিন যেভাবেই হোক টাকা পরিশোধ করবেই। এই ভেবে পরমু মহাজন গোপালের বাড়িতে গিয়ে হাজির হল। কই হে গোপাল টাকা দেবে বলেছিলে দাও, আমি ঠিক সময় মত এসেছি। মহাজনের ডাক শুনে গোপাল বাড়ির বাইরে বেরিয়ে এসে বলল, কাকভোরে ছুটে এসেছেন, দয়া করে বাড়ির দাওয়ায় একটু বিশ্রাম করুন- আমি যত তাড়াতাড়ি পারি আপনার টাকা পরিশোধের ব্যবস্থা করছি। আপনি কষ্ট করে এসেছেন প্রাণের টানে তাতেই আমি কৃতার্থ। আমার বাড়ি আজ পবিত্র হল। bongo-barta
গোপাল নারকেলের চারা পুঁততে পুঁততে বলল, দেখছেন তো চারা পুঁতছি। একটু বসুন না। এখনি হয়ে যাবে পোতাঁ। আপনার টাকার ব্যবস্থা করে তবে আজ জলগ্রহণ করবো। এই দেখুন। করছি কিনা আপনি আর একটু বসে নিজে দেখুন। আপনি অপেক্ষা করুন, হলো বলে। বিশ্বাস না হয় উঠে এসে দেখুন।
কাজ শেষ করে গোপাল কাছে এসে দাড়াঁতেই মহাজন জিজ্ঞেস করলে, সেই থেকে তো বসিয়ে রেখেছো- একটা তামাকও দিলে না, যাক কই টাকা দাও। আমার তাড়া আছে।
গোপাল মুচকি হেসে বলল, এতক্ষণ ধরে তো আপনার টাকা শোধের ব্যবস্থাই তো করলুম মশাই।
তার মানে? তুমি তো এখন নারকেলের চারা পুঁতলে। আমার টাকার ব্যবস্থা করলে কি করে?
গোপাল বলল, এই যে নারকেলের চারা পুঁতলাম তাতে নারকেল গাছ হবে এবং এতগুলো নাকেল গাছে যা ফল হবে তা তো আর কম নয়। দুবছরের নারকেলের টাকায় আপনার সব দায় দেনা শোধ হয়ে যাবেই। আপনাকে যখন কথা দিয়েছি আজই টাকা শোধের ব্যবস্থা করব, তাই ব্যবস্থা করে দিলাম। দুবছরের জন্য নারকেলের ইজরাও আপনাকে দিয়ে এলুম। আর ভাবছেন কেন, ধরুন আপনার টাকা বলতে গেলে নিশ্চিন্তে পেয়েই গেলেন সুদ সমেত।
গোপালের কথা শুনে পাওনাদার হাসবে না কাঁদবে ভাবতে ভাবতে শেষ পর্যন্ত বেচারা হেসেই ফেলল।
গোপাল বলল, এখন কি না টাকাটা নগদ পেয়ে গেলেন বলে হাসি আর ধরে না যে দাদার।
লেখা: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত
প্রিয় পাঠক, আপনিও অংশ নিতে পারেন আমাদের এ আয়োজনে। আপনার মজার (রম্য) গল্পটি পাঠিয়ে দিন robiahammed12321@gmail.com ঠিকানায়। লেখা মনোনীত হলেই যেকোনো শুক্রবার প্রকাশিত হবে।